সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৪:০৬ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তিঃ
আমাদের সিলেট দর্পণ  ২৪ পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে , আমাদেরকে আপনাদের পরামর্শ ও মতামত দিতে পারেন news@sylhetdorpon.com এই ই-মেইলে ।
সিলেট বিভাগে তুচ্ছ ঘটনায় এক সপ্তাহে ৭ খুন

সিলেট বিভাগে তুচ্ছ ঘটনায় এক সপ্তাহে ৭ খুন

নিউজ ডেস্ক ◾সিলেট বিভাগে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্রমাগত বাড়ছে অপরাধ।এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে গত এক সপ্তাহে ৭ জন খুন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

পারিবারিক কলহ, পূর্বশত্রুতার জের, সম্পর্কের অবক্ষয়, পরকীয়া, ব্যাবসায়িক ও ব্যক্তিস্বার্থের দ্বন্দ্ব, ছিনতাই সহ বিভিন্ন তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা-কাটাকাটি, এমনকি ঝগড়া-বিবাদ থামাতে গিয়েও একের পর এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আহত হচ্ছে অনেকে। সিলেটজুড়ে গত সাত দিনে তুচ্ছ ঘটনায় অন্তত ৭ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

সূত্র মতে, সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে মাত্র ৩৬ হাজার টাকাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মোশাহিদ মিয়া (১৮) নামে এক কিশোর নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরো অন্তত ১৫ জন। রোববার দুপুরে উপজেলার দত্তপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।বানিয়াচং থানার (ওসি) মোঃ এমরান হোসেন জানান, দত্তপুর গ্রামের আব্দুল কাদির নামে এক ব্যক্তি হবিগঞ্জ শহরের রাজনগর বাইপাস রোড এলাকায় ভাঙাড়ির ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। আর তার ভাঙারির দোকানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো নিহত মোশাহিদ মিয়ার ফুফাতো ভাই হাফিজুল। গত ৩ মাস যাবত ব্যবসায়ী আব্দুল কাদির হাফিজুলের প্রতিমাসের বেতন ১২ হাজার টাকা করে মোট ৩৬ হাজার টাকা দেয়নি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনমালিন্য ও বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে শালিশ বৈঠকে হাফিজুলের ৩৬ হাজার টাকা দেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত হয়ে বিষয়টি মিমাংসা করা হয়।

তিনি বলেন, রোববার এ বিষয়ে নিয়ে আবারো গ্রামের বাড়িতে উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে সুজাতপুর ফাঁড়ি পুলিশ ও বানিয়াচং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। গুরুতর আহত অবস্থায় মোশাহিদকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ দেবাশীষ রায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়াও রায়হান মিয়া, ডালিম আহমেদ, সালমা বেগম, জুয়েল মিয়া, ছবুর আহমেদ, রেজাক মিয়াসহ অন্তত ১৫ জনকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদিকে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দক্ষিণ দুবাগে বাড়ির হদ নিয়ে ভাগ বন্টনের জের ধরে দুই ভাইয়ের মধ্যে সংঘর্ষ হলে পাশের ঘরের সুফিয়া বেগম(৪৩) নামের এক মহিলা ইটের আঘাতে আহত হয়ে সোমবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন।তিনি সুরুজ আলীর স্ত্রী।এ ঘটনায় দুই ভাইকে আটক করেছে পুলিশ।তারা হলেন আব্দুল কাদিরের পুত্র মাসুক(৪২) ও নাজিম (৩৪)।

এর আগে শনিবার সিলেটে সিনিয়র জুনিয়র দ্বন্দ্ব নিয়ে ছুরিকাঘাতে নাজিম আহমদ (১৯) নামের এক যুবক খুন হন। শনিবার রাত ১০টার দিকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেটের সামনে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।এ ঘটনায় জুয়েল আহমদ (২৪) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।নিহত নাজিম সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার নুর মিয়ার ছেলে। সিলেট নগরের দরগাহ মহল্লার ৭৪ নং বাসায় ভাড়া থাকতেন। তিনি পেশায় হোটেল শ্রমিক।

একইদিন ভোর ছয়টার দিকে সিলেট সদর উপজেলার এয়ারপোর্ট থানাধীন সাহেবের বাজারে জমিসংক্রান্ত সংক্রান্ত বিরোধের জেরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে ডা. মো. নিজাম উদ্দিন নামে এক পল্লী চিকিৎসক নিহত হয়েছেন। তিনি বাজারতল গ্রামের মৃত বশির উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার পর পুলিশ বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে এ ঘটনায় জড়িত ৪ জনকে আটক করেছে।

একইভাবে গত শুক্রবার বড়লেখা সদর ইউপির কেছরিগুলে কথা কাটাকাটির জের ধরে রুবেল আহমদ (২৮) নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এছাড়া গত ৪ এপ্রিল মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের বাসিন্দা ফার্নিচার ব্যবসায়ী আতিকুর রহমান সুমনকে (২৮) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার ভোর ৫টার দিকে নবীনগর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আতিকুর রহমান সুমন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌর এলাকার আলেপুর গ্রামের মৃত আবু মিয়ার ছেলে।সুমন হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে সুমনের সহযোগি সোহেল মিয়াসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

এর আগে গত ৩ এপ্রিল সিলেটের জৈন্তাপুরের হরিপুর বাজারে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের প্রায় ১০ ঘন্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে পরদিন ভোরে মধ্যস্তাকারী একজন নিহত হয়েছেন।তার নাম হাফেজ মৌলানা সালেহ আহমদ। নিহত সালেহ আহমদ স্থানীয় হেমু গ্রামের বাসিন্দা ও সিলেট নগরের মেজরটিলা তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসায় শিক্ষক।

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ সিলেট দর্পণ ।