শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪২ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তিঃ
আমাদের সিলেট দর্পণ  ২৪ পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে , আমাদেরকে আপনাদের পরামর্শ ও মতামত দিতে পারেন news@sylhetdorpon.com এই ই-মেইলে ।
হবিগঞ্জে আলুর দামে তেলেসমাতি

হবিগঞ্জে আলুর দামে তেলেসমাতি

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : বেশ কিছুদিন ধরেই আলুর দাম নিয়ে সারাদেশজুড়ে চলছেন হই-হুল্লোর। ২৮ টাকা কেজির আলুর নিমেষেই দাম উঠে যায় ৬০ টাকায়। এতে বেকায়দায় পড়েন সাধারণ ক্রেতারা। আলুর বাজারের লাগাম টানতে সরকার থেকে ৩০ টাকা কেজি নির্ধারণ করে দেয়া হয়। কিন্তু এরপরও লাগাম টানা যায়নি অতি মুনাফালোভি এক শ্রেণির ব্যবসায়িরা। খুচরা ব্যবসায়িরা দাবি করেন পাইকারী বাজার নিয়ন্ত্রণ করলে আলুর দাম এমনিতেই কমে যাবে। পাইকারী বাজার থেকে উচ্চ মূল্যে আলু কেনার কারণে খুচরা ব্যবসায়িদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এদিকে, গত দুই দিন ধরে আলু বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবিগঞ্জে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। বিভিন্ন বাজরে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে ব্যবসায়িদের। আবার কোথাও কোথায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা সহকারী কমিশনার, জেলা প্রশাসনের ম্যাজেস্ট্রেট এবং জেলা প্রশাসক নিজে উপস্থিত থেকে সরকার নির্ধারিত ৩০ টাকা কেজি ধরে আলু বিক্রি করেছেন। এতে বড় ধরণের লোকসানের মূখে পড়েছেন খুচরা ব্যবসায়িরা।
কোন কোন খুচরা ব্যবসায়ি গুণেছেন মোটা অংকের জরিমানা আর কোন কোন ব্যবসায়িকে ৪০ টাকা কেজিতে আলু কিনে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতি বিক্রি করতে হয়েছে ৩০ টাকায়। এতে বড় অংকের মুনাফা হারিয়ে অনেক খুচরা ব্যবসায়ি আলু বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি ম্যাজিন্ট্রেটের অভিযানের ভয়ে বাকি ব্যবসায়িরাও খোলছেন না আলুর দোকান। এতে বাজারে আলু না পেয়ে পুরোপুরি বেকায়দায় পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।
হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজারের খুচরা আলু ব্যবসায়ি মনোয়ার আলী বলেন, ‘আমি পাইকারী বাজার থেকে ৩৮ টাকা কেজি ধরে আলু কিনেছি। কিন্তু রোববার জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে আমি ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। শুধুমাত্র একদিনেই আমার লোকসান হয়েছে ১০ হাজার টাকা।’
একই বাজারের ব্যবসায়ি শাওয়ন আল হাসান বলেন, ‘আমার কাছে যে আলু রয়েছে তার সম্পূর্ণটাই ৩৮/৪০ টাকা কেজিতে কেনা। এখন আমি ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি করলে পথে বসতে হবে। তাই আমি পুরোপুরি বেকায়দায় পড়েছি। এখন আলু বিক্রি করতে না পারলে একদিকে যেমন পঁচে যাবে অন্যদিকে কম দামে বিক্রির কারণে অনেক টাকা লোকসান গুণতে হবে। আমি পথে বসা ছাড়া কোন উপায় নাই।’
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সরকার পাইকারী বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। আর আমরা গরিব খুচরা ব্যবসায়িদের ‘ছাই’ দিয়ে ধরে। পাইকারী বাজারে দাম বেশি থাকলে আমরা কি করব? পাইকারী বাজারে ২ টাকা কেজি আলু বেচলে আমরা ৩ টাকা বেচব। আমাদের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট আসতে হবে না।’
মাধবপুর পৌরসভার ব্যবসায়ি রমজান মিয়া বলেন- ‘আলু পাইকারী ৪০ টাকা দরে কিনেছি। এখন ৩০ টাকা কেজি ধরে বিক্রি করলে বাড়ি বেচে ব্যবসা করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘পাইকারী ব্যবসায়ি ঠিকই অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করছে। কিন্তু পথে বসব আমরা খুচরা ব্যবসায়িরা।’
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান বলেন, ‘আমরা পাইকারী-খুচরা দুই বাজারেই নজর রাখছি। দুই বাজারেরই আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা অভিযান পরিচালনা করছেন। এছাড়া কোন খুচরা ব্যবসায়িকে জরিমানা করা হয় না। ইতোমধ্যে আলুর দাম বেশি রাখায় শায়েস্তাগঞ্জ ও আজমিরীগঞ্জে পাইকারী ব্যবসায়িদের জরিমানা করা হয়েছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ সিলেট দর্পণ ।