শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৫৭ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তিঃ
আমাদের সিলেট দর্পণ  ২৪ পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে , আমাদেরকে আপনাদের পরামর্শ ও মতামত দিতে পারেন news@sylhetdorpon.com এই ই-মেইলে ।
বদরুল ইসলামের কলাম – বর্তমান সমাজ ও অর্জিত শিক্ষা

বদরুল ইসলামের কলাম – বর্তমান সমাজ ও অর্জিত শিক্ষা

আমরা যদি বর্তমান সমাজ তথা শিক্ষা নিয়ে ভাবি তবে নিঃসন্দেহে অনেকটা এগিয়ে বলতে পারি।শুধু তা নয় আমরা এখন আধুনিক প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত।তবে আমরা আদৌ কি সুশিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছি?শিক্ষার ক্ষেত্রের সুশিক্ষা আর কুশিক্ষা উভয়’ই বহমান।
বর্তমান সমাজটাকে শিক্ষিত নামধারি কুশিক্ষিতরাই ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।এদের মধ্যে না আছে মানবতা,না আছে শিষ্টাচার,না আছে নমনীয়তা।আপন অহমিকা শিক্ষিত যুবসমাজকে ঘুংরায়ির দিকে দাবিত করছে।ওরা শিক্ষিত হয়ে সাধারণ মানুষকে সাবধানতার শিক্ষা দিতে পারে না,বরং সমাজে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করছে।যে শিক্ষা উদার মনের বহিঃপ্রকাশ ঘটায় না সেই শিক্ষার কি দরকার?একটা সময় ছিলো সমাজে মারামারি,দ্বন্দ্ব, হানাহানি লেগেই থাকতো।তখনকার মানুষও ছিলো নিরক্ষর। সমাজ পরিপূর্ণ ছিলো কুসংস্কারে।এখন তো আর সেই সমাজ নেই,নেই সমাজে নিরক্ষরতা।তবুও কেন আমাদের পরিবর্তন আসছে না।মূল কথা হচ্ছে আমরা শিক্ষত হচ্ছি কিন্তু সুশিক্ষায় শিক্ষিত হচ্ছি না।দেহের পরিবর্তন হলেও আমাদের মন মানুসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে না।যেখানে জ্ঞাণী লোকের কদর নেই সেখানে জ্ঞানী লোক জন্মায় না।অতচ!আমরা জ্ঞাণী লোকের কদর করছি না।সবাই নিজেকে মহাজ্ঞাণী ভাবছি।এরকম চললে সমাজে আলোকিত বার্তা আসবে না।জন্মাবেনা জ্ঞাণী লোক।
গ্রামীন সমাজে প্রভাব খাটাতে গ্রামের সাধারণ মানুষগুলোকে দলেদলে বিভক্ত করছি।এতে করে সমাজের সামাজিকতা ধ্বংস করছি।সৃষ্টি করছি সামাজিক দ্বন্দ্ব।বর্তমান সমাজে আঞ্চলিক রাজনীতি ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করছে।এর ইতিবাচক দিক অপেক্ষা নেতিবাচক দিকটাই বেশি।এর ফলে নষ্ট হচ্ছে সামাজিক শান্তি, সৃষ্টি হচ্ছে বিশৃঙ্খল। আমাদের রাজনীতি করার আগে বুঝতে হবে এবং জানতে হবে রাজনীতি কি এবং কেন!
এদিকে শান্তির ধর্ম ইসলাম বলে দিয়েছে প্রত্যেক মুসলমান একে অন্যের ভাই।কিন্তু কই আমরা আজ এক ভাইয়ের রক্ত আরেক ভাই দেখতে চাই।ভাইয়ের হাতে হচ্ছে ভাই খুন।তবে কি এটাই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য?
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ইহা নয়।তবে ইহাই সত্য আমরা এখনও শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে জ্ঞাত নয়।
পৃথিবীতে যত বড় বড় পন্ডিত,মহাজ্ঞানী তথা দার্শনিকরা অবদান রেখে গেছেন একবার তাদের কথা ভাবুন।তারা কত জ্ঞাণী তবুও তাঁরা বলতো কিছুই জানেনা।আর আমরা অল্পকিছুতে নিজেকে মহাজ্ঞানী ভাবি।কত সাদাসিধে ছিলো তাদের জীবন।সমাজ সংস্কার তথা সামাজিক কুসংস্কার দূর করণে তাঁরা কত না অবদান রেখে গেছে।আর আমরা সামাজিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টিতে ব্যতিব্যস্ত।আমাদের এসব অবস্থান থেকে বেরং হয়ে আসতে হবে।নিজেকে নিজে সম্মান করতে হবে,তার চেয়ে অধিক গুরুজনকে সম্মান করতে হবে।আমাদের অবশ্যই ছোটদের স্নেহ করতে হবে।

আমরাই চাইলে পারি পুরো সমাজকে পরিবর্তন করতে।সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হাঙ্গামা থেকে যতদিন আমরা বের হয়ে আসতে পারবো না, আমাদের সমাজেকে বের করে নিয়ে আসতো পারবো না,ততদিন নিজেকে শিক্ষিত আর সচেতন ভাবতে পারবো না।আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে শিক্ষিত সমাজে অনিয়ম,অন্যায় মানায় না।শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য আপন অহমিকা নয়।শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য মানবতা,উদারতা,নমনীয়তা, সততা আর সহনশীলতা।আমাদের অবশ্যই আচার আচরণ গত পরিবর্তন আনতে হবে।মনে রাখতে হবে ভালো আচার আচরণ তথা সামাজিকীকরণের শিক্ষা পরিবার থেকে অর্জন করতে হয়।শিক্ষার সাথে শুধু এর সামঞ্জস্য থাকতে হয়।
সব মিলিয়ে সামগ্রিক পরিবর্তন আমাদের হাতে। আমরা চাইলে পুরো সমাজকে অগ্রগতির দিকে নিয়ে যেতে পারি।আমরা চাইলে পারি গড়তে আলোকিত সমাজ।

——লেখক:তরুণ কবি ও সাংবাদিক

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ সিলেট দর্পণ ।