শনিবার, ২৭ Jul ২০২৪, ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তিঃ
আমাদের সিলেট দর্পণ  ২৪ পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে , আমাদেরকে আপনাদের পরামর্শ ও মতামত দিতে পারেন news@sylhetdorpon.com এই ই-মেইলে ।
জমি দখল নিতে ফসল কেটে দিল চেয়ারম্যান

জমি দখল নিতে ফসল কেটে দিল চেয়ারম্যান

দর্পণ ডেস্ক : পাবনার হেমায়েতপুরে জমির দখল নিতে চাষিদের পাঁচ একর জমির ফসল কেটে নষ্ট করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। চাষিদের অভিযোগ, বৈধ কাগজ না থাকলেও ভয়ভীতি ও হত্যার হুমকিতে জোর করে এসব জমির দখল নিতে চাইছেন হেমায়েতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথা ও তার সহযোগীরা। তবে, ঘটনায় নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে নিজেদেরকেই জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে দাবি করেছেন অভিযুক্তরা।

চাষিরা জানান, ১৯৪৮ সালে সরকারি নিলামে চরভবানীপুর মৌজায় এসব জমি কিনে চাষাবাদ শুরু করেন তাদের পূর্বপুরুষ। সর্বশেষ হালনাগাদ সনের খাজনাও দিয়েছেন তারা। গত কয়েক বছর ধরে কেনা সম্পত্তি দাবি করে জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন হেমায়েতপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথা ও তার সহযোগীরা। আইনি লড়াইয়ে হেরে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে জমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করছেন তারা।

চরভবানীপুর গ্রামের কৃষক জামাল প্রামাণিক জানান, বন্যার পানি নামার পর চরভবানীপুরে পদ্মা চরের ৪০৫১ ও ৪২০৭ দাগের প্রায় ৫ একর ৯২ শতাংশ জমিতে কলা ও খেসারি বুনেছিলেন তিনি ও তার প্রতিবেশীরা। গত মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী সশস্ত্র হামলা চালিয়ে জমির ফসল কেটে নষ্ট করে দেয়। মাত্র আধা ঘণ্টার মধ্যেই তারা প্রায় তিন লাখ টাকার ফসল নষ্ট করে দেয়।

মহসিন মালিথা নামের ক্ষতিগ্রস্ত আরেক চাষি বলেন, ‌দিনে দুপুরে চেয়ারম্যান আলাউদ্দিনের অনুসারী হামদুর নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জন সন্ত্রাসী আমাদের ফলন্ত জমির ফসল নষ্ট করে দিয়েছে। এখানে চাষাবাদ করলে হত্যা করা হবে বলে শাসিয়েও গেছে। জমির ফসলের ওপর আমার পুরো পরিবার নির্ভরশীল, এখন এই জমিটুকু কেড়ে নিলে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে।

ক্ষতিগ্রস্ত চাষি বারিক মালিথা অভিযোগ করে বলেন, গত ৭০ বছর ধরে সরকারি নিলামে কেনা এসব জমি আমরা ভোগ দখল করছি। সরকারি রেকর্ড, নিবন্ধনের ও ক্রয় বিক্রয়ের বৈধ কাগজ পত্র আমাদের আছে। এরপরেও বাকি ও আলাউদ্দিন গত দুই বছর ধরে এসব সম্পত্তি তাদের বলে দাবি করছে। গ্রাম্য সালিশে তারা যৌক্তিক কোনো দলিল বা কাগজ দেখাতে পারেনি। এখন, আমাদের উচ্ছেদ করে গায়ের জোরে জমির দখল নিতে চাইছে।

ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন মালিথা বলেন, চরভবানীপুরে অভিযোগকারী চাষিদের কোনো জমিই নেই। নিলাম সূত্রে কেনা তাদের জমিগুলো জয়েনপুর মৌজায়। তারা জোর করে আমাদের জমিতে ফসল আবাদ করছে। তবে, ফসল নষ্টের অভিযোগ সঠিক নয়।

এদিকে জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল বারী বাকীও বলেন, চাষিদের দখলে থাকা জমি আলাউদ্দিন চেয়ারম্যান ও রমজান আলী চাঁদু এবং আমার কেনা সম্পত্তি। চাষিরা ভুল করে আমাদের জমি দখল করে আছে। বিষয়টি নিয়ে একাধিক সালিশে সমাধান হয়নি। উচ্চ আদালতে মামলা চলছে। জমি নিয়ে বিরোধ থাকলেও ফসল নষ্টের বিষয়টি আমার জানা নেই।

এদিকে, ফসল নষ্টের ঘটনায় ভুক্তভোগী চাষিরা বৃহস্পতিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

পাবনার অ্যাডিশনাল এসপি মাসুদ আলম বলেন, চাষিদের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ফসল নষ্টের প্রমাণ মিলেছে। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ সিলেট দর্পণ ।