বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৭ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তিঃ
আমাদের সিলেট দর্পণ  ২৪ পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে , আমাদেরকে আপনাদের পরামর্শ ও মতামত দিতে পারেন news@sylhetdorpon.com এই ই-মেইলে ।
শোকের আগুনে লেখা – পলাশ আফজাল

শোকের আগুনে লেখা – পলাশ আফজাল

শোকের আগুনে লেখা

পলাশ আফজাল

শোকের আগুনে বাঙালির হৃদয়ে লেখা কয়েকটি হরফ এ যেন বড় কষ্টের,বড় অসহায়ত্বের আর কলঙ্কজনক অধ্যায় বিশ্ব ইতিহাসের।

আমি শোকের মাস আগস্টের কথা বলছি। এই মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত হয়েছে ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড।সেজন্য ১৫ আগস্ট আমাদের জাতীয় শোক দিবস। মানব সভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত বেদনাবিধূর শোকের দিন এই ১৫ আগস্ট। ১৯৭৫ সালের এই দিনে মানবতার ভয়ংকরী শত্রু প্রতিক্রিয়াশীল মানবরূপী দানব নামীয় ঘাতকচক্রের হাতে বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলনের মহানায়ক, বিশ্বের লাঞ্ছিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষের মহান নেতা, বাংলা ও বাঙালির স্বপ্নদ্রষ্টা, বাঙালির নিরন্তন প্রেরণার চিরন্তন উৎস, স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে শাহাদাত বরণ করেন।

সেদিন ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম এই হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী, মহিয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভ্রাতা শেখ আবু নাসের, জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র নিষ্পাপ শিশু শেখ রাসেল, নবপরিণীতা পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি ও তাঁর অন্তঃসত্ত¡া স্ত্রী বেগম আরজু মণি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক ও জাতির পিতার ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, তাঁর ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, দৌহিত্র সুকান্ত আব্দুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আব্দুল নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা অফিসার কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ ও কর্তব্যরত অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী নৃশংসভাবে নিহত হন।

তাইতো আগস্ট মাস বাঙালি জাতির শোকের মাস।শোকের আগুনে হৃদয়ে লেখা বেদনার মাস।বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারানোর মাস। এই মাসেই বাংলার মাটি ও মানুষের পরম আত্মীয়, শত বছরের ঘোর নিশীথিনীর তিমির বিদারী অরুণ, ইতিহাসের বিস্ময়কর নেতৃত্বের কালজয়ী স্রষ্টা, বাংলার ইতিহাসের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা,বাঙালি জাতির পিতা, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি,উন্নত সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবুর রহমানকে হারিয়েছে।কাঁদে বাঙ্গালি কাঁদে, যুগ থেকে যুগান্তরে,তাদের প্রিয় নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য।

’৭৫-এর ১৫ আগস্ট নরপিশাচরূপি খুনিরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্ককের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়। জাতির পিতার সুযোগ্যকন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত সরকার বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করে। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাংলার মাটিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হবেই। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সকল ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে নানা প্রতিক‚লতার মুখোমুখি হয়েও ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রক্রিয়া শুরু করেন।

বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চিরঞ্জীব, তার চেতনা অবিনশ্বর। বাঙালি জাতির অস্থিমজ্জায় মিশে আছেন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মুজিবাদর্শে শাণিত বাংলার আকাশ-বাতাস জল-সমতল। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশী চেতনা ও আদর্শ চির প্রবাহমান থাকবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে।কিন্তু নরপশুর দল মনে করেছিল তাকে হত্যা করলে থমকে যাবে বাংলাদেশ, ভূলুণ্ঠিত হবে প্রিয় স্বাধীনতা।কিন্তু আজ বাংলাদেশ থেমে নেই, উন্নয়নের অভিযাত্রী হয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত সমৃদ্ধ বিশ্বের পথে চলছে নিরলস ভাবে।

তাই একজন বাংলাদেশী হিসাবে দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে বলতে পারি, দেশ যত দিন থাকবে মাটি ও মানুষ যত দিন থাকবে শোকের আগুনে দীপ্ত ভাষায় লেখা থাকবে একটি নাম শেখ মুজিবুর রহমান।

পলাশ আফজাল

সম্পাদক – সিলেট দর্পণ

সদস্য, বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগ।

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ সিলেট দর্পণ ।