জানা যায়, প্রায় ৯ মাস আগে উসমানপুর ইউনিয়নের তাহিরপুর গ্রামের মৃত ইছন আলীর ছেলে আরশ আলীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন নবীগঞ্জ উপজেলার পুটিয়া গ্রামের শাকিম উল্যার ছোট মেয়ে শরিফা। বিয়ের কিছুদিন পর যৌতুকসহ নানা অজুহাতে স্বামী আরশ আলী ও শাশুড়ী মিনারা বেগমের নির্যাতন বৃদ্ধি পেতে থাকে। নিজে অন্তঃসত্ত্বা থাকায় তাদের নির্যাতন সহ্য করে গর্ভের সন্তানকে আলোর মুখ দেখাতে স্বামীর বাড়িতে পড়ে থাকেন শরিফা। রমজান মাসে তার পিত্রালয় থেকে ইফতারি দিতে দেরি করায় এবং দামান্দের জন্য আলাদাভাবে স্পেশাল থালা না দেয়ায় শরিফার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়।

৭ মে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইফতারের সাথে ঈদের নতুন কাপড় না আসায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায় আরশ আলীও মিনারা বেগম মিলে মারপিট করেন শরিফাকে। বিষয়টি তাৎক্ষনিক মোবাইলফোনের মাধ্যমে শরিফা তার ভাইকে অবগত করে।এরপর সেহরির সময়ে শরিফার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পান তার ভাই-বোনরা।

৮ মে শনিবার শরিফার বড় বোন শিপন আক্তার শরিফার স্বামী শাশুড়ীর জন্য নতুন কাপড় নিয়ে আরশ আলীর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন।পথিমধ্যে তিনি শরিফার ভাশুরের মাধ্যমে খবর পান তার বোন খুবই অসুস্থ।এর পর জানতে পারেন তার বোন আত্মহত্যা করেছে।

নিহতের ভাই বোনের দাবি করে বলেন, বিয়ের পর থেকেই আমার বোনের ওপর তার স্বামী ও শাশুড়ী যৌতুকসহ নানা অজুহাতে নির্যাতন করতো। তাদের নির্যাতনের কারনে আমরা তাকে নিয়ে যেতে চাইলেও গর্বের সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমার বোন সব কিছু নিরবে সহ্য করে যেত। আমরা গরিব মানুষ লকডাউনের কারনে অভাবঅনটনে চলতি রমজান মাসে ইফতারী পাঠাতে দেরি করায় তার স্বামী ও শাশুড়ী নানাভাবে নির্যাতন করে।তারা ঈদের কাপড়ের অযুহাতে আমার বোনকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দিয়ে তার গর্ভের সন্তানটিকেও আলোর মুখ দেখতে দেয় নি। ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিষয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তারা।

ওসমানীগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শ্যামল বনিক বলেন, খবর পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছি। লাশের গায়ে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাই নিহতের স্বামী ও শাশুড়ীকে আটক করেছি।