শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০৩:২৪ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তিঃ
আমাদের সিলেট দর্পণ  ২৪ পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে , আমাদেরকে আপনাদের পরামর্শ ও মতামত দিতে পারেন news@sylhetdorpon.com এই ই-মেইলে ।
শেষ পর্যন্ত পরিবারসহ বাড়ি ছাড়তে হলো ধর্ষণের শিকার সেই ছাত্রীর

শেষ পর্যন্ত পরিবারসহ বাড়ি ছাড়তে হলো ধর্ষণের শিকার সেই ছাত্রীর

দর্পণ ডেস্ক : ছাত্রীকে মেয়ে বানিয়ে দিনের পর দিন ধর্ষণ করছিলেন এক মাদরাসার শিক্ষক। শুক্রবার ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে মেয়ের পরিবারের লোকজন বিচার চাইতে গেলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়। পরে এলাকার সালিসকারীদের হস্তক্ষেপে ওই মেয়ে ও তার পরিবার বাড়ি ছেড়ে লাপাত্তা হয়েছে বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর ঘরে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে একাধিক খবর প্রকাশ পেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে নামে।

জানা গেছে, অভিযুক্ত মাওলানা আবুল মনসুর উপজেলার তারুন্দিয়া ইউপির কান্দুলিয়া গ্রামের মো. বছির উদ্দিনের ছেলে এবং উম্মাহাতুল মোকমেনিন আদর্শ মহিলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক। ১০ বছর আগে তিনি পাশের উচাখিলা বাজারের জমি ক্রয় করে বাড়ি করেন। বাসার সামনেই গড়ে তোলেন মাদরাসা। কোরআন শিক্ষার পাশপাশি একাধিক শিক্ষক রেখে তিনি এখানে কোচিং ব্যবসাও করেন। এলাকার প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী মাদরাসাটিতে পড়াশোনা করে।

আবুল মনসুর এলাকাতেই দুটি বিয়ে করেছেন। দুই স্ত্রীও এক সঙ্গে বসবাস করেন। এ অবস্থায় পাশের একটি গ্রামের কিশোরীকে ‘মেয়ে’ বানিয়ে ওই বাড়িতে নিয়মিত আসা-যাওয়া করেন। একপর্যায়ে ওই কিশোরীর পরিবারকে রাজি করিয়ে নিজ খরচে মাদরাসায় রেখেই পড়াশোনা করানোর দায়িত্ব নেন। এর মধ্যে তার কু-মতলবের কারণে ওই কিশোরী নিজের বাড়িতে চলে যায়। বেশ কয়েকদিন আর মাদরাসায় আসেনি ওই ছাত্রী।

কিশোরীর মা জানান, তার মেয়ে আর মাদরাসায় যাবে না বলে মন খারাপ করে থাকে। আর কোনো কিছুই বলে না। এ অবস্থায় একদিন হুজুর বাড়িতে এসে অনেক হাদিসের কথা বলে ফের মেয়েকে নিয়ে যায়। মাসখানেক পর মেয়ে আবার বাড়িতে চলে এসে জানায় বিভিন্ন শপথ করে হুজুর তাকে নিজের স্ত্রীর মতো আচরণ করেন এবং প্রতিবাদ করায় বিয়ে করবে বলে সাদা স্ট্যাম্পেও স্বাক্ষর নেন।

ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানালে গত শুক্রবার কথিত হুজুরকে ডেকে এনে মেয়ের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের কাছে মেয়ে হুজুর কর্তৃক দিনের পর দিন ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দেয়। ঘটনাটি সালিসে মীমাংসার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব না হওয়ায় ঘটনাটি ব্যাপক প্রচার হয়।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান একএম মোতব্বিরুল ইসলাম জানান, মেয়ের পরিবারের লোকজন গত শুক্রবার তার কাছে এসে একটি সাদা স্ট্যাম্প দেখান। স্ট্যাম্পে মেয়ের ও মাদরাসা শিক্ষকের স্বাক্ষর রয়েছে। পরে ওই পরিবারকে থানার আশ্রয় নিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু পরদিন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন এলাকায় এসে খোঁজ খবর নিলে মেয়ের সন্ধান পায়নি। পরিবারের লোকজন মেয়েকে নিয়ে চলে গেছে। সেই সঙ্গে লাপাত্তা হয়ে গেছেন অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষকও।

তবে এলাকার লোকজন জানান, সালিসকারীরা অভিযুক্তের কাছ থেকে মোটা অংকের জরিমানা আদায় করে মেয়ে ও তার পরিবারকে ঢাকায় পাঠিয়ে দিয়েছেন।

ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল কাদির মিয়া বলেন, মেয়েটার খোঁজ নিতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। সন্ধান পাওয়ামাত্রই লিখিত অভিযোগ নিয়ে মামলা রেকর্ড করা হবে।

সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ সিলেট দর্পণ ।