শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:০৭ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তিঃ
আমাদের সিলেট দর্পণ  ২৪ পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে , আমাদেরকে আপনাদের পরামর্শ ও মতামত দিতে পারেন news@sylhetdorpon.com এই ই-মেইলে ।
কওমি মাদরাসা খালি করার নির্দেশ জেলা প্রশাসকদের

কওমি মাদরাসা খালি করার নির্দেশ জেলা প্রশাসকদের

দর্পণ ডেস্ক : করোনার সময় লকডাউনে হেফাজত নেতারা বলছে কওমি মাদরাসা বন্ধ করা যাবে না, তাতে পাত্তা দিচ্ছে না সরকার। সরকারের সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসকেরা কাজ করছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত বহাল আছে। এর কোনো পরিবর্তন করা যাবে না।’

যেসব মাদরাসায় জেলা পর্যায়ে এতিমখানা আছে সেইসব মাদরাসার অনেকগুলোতে শুধু এতিমখানা ছাড়া মাদরাসার বাকি ছাত্রদের এরই মধ্যে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।

‘লকডাউনে মসজিদ-মাদরাসা বন্ধ করা যাবে না।’রোববার হাটহাজারীতে হেফাজতের বৈঠকের পর সংগঠনটির আমির মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন,

তিনি আরো বলেন, ‘নুরানী, হেফজখানা, কওমি দ্বীনি মাদরাসা বন্ধ রাখা যাবে না। যেখানে হেফজখানায় ছাত্ররা কুরআন পাঠ করে সেখানে করোনা আসবে না যেখানে কুরআন-হাদিস পাঠ করা হয় ।’

করোনার সময় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও মাঝখানে কওমি মাদরাসা খুলে দেয়া হয়। কিন্তু গত ৬ এপ্রিল কওমি মাদরাসাসহ সব ধরনের মাদরাসা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। উক্ত আদেশে এতিমখানা এই আদেশের বাইরে রাখা হয়।

আলিয়া মাদরাসাগুলো আগে থেকেই বন্ধ থাকলেও নতুন নির্দেশের পর কওমি মাদরাসাগুলো বন্ধে গড়িমসি করে। আর দেশের কওমি মাদরাসাগুলো সরকারের কোনো শিক্ষা শিক্ষা বোর্ডেও অধীন নয়। তারা তারা বেফাকের অধীনে পরিচালিত হয়। এতে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই। কওমি মাদরাসাগুলো হেফাজতের নিয়ন্ত্রণে।

বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কায়সার আহমেদ বলেন, ‘কওমি মাদরাসা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নাই। আলিয়া মাদরাসা আগে থেকেই বন্ধ আছে। তারপরও আমরা নতুন করে তাদের সরকারি আদেশের কথা জানিয়ে দিয়েছি।’

কওমি মাদরাসাগুলো খালি করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে জেলা প্রশাসকদের। তাদের লিখিত নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।

দেশে সবচেয়ে বেশি কওমি মাদরাসা, চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, এবং নারায়ণগঞ্জে। হাটহাজারী মাদরাসা হলো কওমি মাদরাসার কেন্দ্র। এই মাদরাসায় ১৪ হাজারের বেশি ছাত্র আছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান জাানান, ‘শুধু এতিমখানার রেজিস্টার্ড ছাত্র ছাড়া আর সবাইকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের যানবাহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।হাটহাজারী মাদরাসায় ২২০ জন এতিম আছেন। যার সেখানে বাড়ি সেখানে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাদের সেবার জন্য আরো ৬০ জনের মতো লোক আছেন। এখন শুধু তারাই মাদরাসায় আছেন। ছাত্রদের সর্বশেষ দলটিকে গ্রামের বাড়িকে পাঠানো হয় সোমবার সকালে।

তিনি জানান, তারা অজুহাত দিয়েছিল যানবাহনের। পরে পরিবহনের ব্যবস্থা করায় তারা আর কোনো আপত্তি করেনি।

দেশের অন্যান্য এলাকার কওমি মাদরাসাগুলোতে কার্যত খালি করে ফেলা হয়েছে।

হেফাজতে ইসলামের প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজী জানান, কওমি মাদরাসার এতিমখানা এবং হেফজখানা খোলা আছে। আর সব বন্ধ করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, ‘এপর্যন্ত মাদরাসার কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়নি।’

তিনি মাওলানা বাবুনগরীর কথাকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, ‘আমরা কুরআন-হাদিস পড়ার সাথে স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলছি। ফলে মাদরাসায় করোনা আক্রান্ত হচ্ছে না।’

এদিকে কওমি মাদরাসা বন্ধের ফলে আয়ের একটি পথ বন্ধ হয়ে গেছে। রোজার মাসেই কওমি মাদরাসাগুলোর আয় সবচেয়ে বেশি। নোমান ফয়েজী বলেন, ‘অনেকেই এই মাসে নামাজ পড়ান, তারাবিহ পড়ান। বিনিমেয়ে কিছু হাদিয়্যা তারা পান এজন্য আমরা চেয়েছিলাম রমজান মাসটা কওমি মাদরাসাগুলো খোলা থাকুক।’

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ সিলেট দর্পণ ।