মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৪ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তিঃ
আমাদের সিলেট দর্পণ  ২৪ পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে , আমাদেরকে আপনাদের পরামর্শ ও মতামত দিতে পারেন news@sylhetdorpon.com এই ই-মেইলে ।
এতিম শিশু তাহের বাকশক্তি ফিরে পেতে চায়

এতিম শিশু তাহের বাকশক্তি ফিরে পেতে চায়

দর্পণ ডেস্ক : মুখের আওয়াজ হারিয়ে যেতে বসেছে এতিম শিশু (৭) তাহেরের। গায়ের জামায় লেগে যাওয়া আগুনে তার শরীরের প্রায় অর্ধেক পুড়ে যায়। দগ্ধ হওয়ার পর তার ডান পাশের গলা ও বুকের চামড়া জোড়া লেগে যায়। যা তার কথা বলার শক্তিকে ধীরে ধীরে কমিয়ে দিচ্ছে।

চিকিৎসকরা আশ্বাস দিয়ে বলছেন, একটা অপারেশন করালেই তাহের আবারও কথা বলতে পারবে। শিশুটি এখন ঠিকমতো কথা বলতে পারা তো দূরের কথা মুখ বন্ধ করতে পারে না এবং ঠিকমতো খেতেও পারে না। কেউ গেলেই নিজের দেহের পোড়া অংশ নিজেই দেখিয়ে দেয় শিশুটি। বলতেও হয় না তাকে দেখানোর কথা।

খালার অর্থে দীর্ঘদিন চিকিৎসায় বর্তমানে তাহের হাঁটাচলা করতে পারলেও ভাষা নেই তার মুখে। বর্তমানে সে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসক তরিকুল ইসলামের অধীনে চিকিৎসারত।

চিকিৎসক জানান, পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন হলে বোঝা যাবে তাহেরের প্রকৃত অবস্থা। তারপরই তার অপারেশনের প্রস্তুতি নেয়া হবে।

তাহেরের দরিদ্র খালা রুমা আক্তার মানুষের কাছে হাত পেতে দুই লাখ টাকার বেশি খরচ করে তাকে প্রাথমিকভাবে সারিয়ে তুললেও এখন তার স্বাভাবিক হতে একটি অপারেশন প্রয়োজন। এজন্য বেশকিছু টাকার প্রয়োজন। যা জোগাড় করার ক্ষমতা তার নেই।

তিনি জানান, নড়াইলের সাংবাদিকরা তাকে যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। তাদের সহযোগিতার কারণেই আজ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাহেরের।

জানা গেছে, নড়াইল সদর উপজেলার আউড়িয়া ইউনিয়নের মুলদাইড় গ্রামের ফরুক হোসেন (৩০) ৫বছর পূর্বে তাহেরের মা লিছিমান বেগম মারা গেলে বাবা ছেলেকে ফেলে অন্যত্র বিয়ে করে চলে যায়। এ অবস্থায় ঢাকায় গার্মেন্টে চাকরিরত তার খালা রুমা আক্তার ঢাকায় নিজের কাছে নিয়ে যায়। একদিন তাহের খেলাচ্ছলে গ্যাস লাইট থেকে শার্টে আগুন ধরে গেলে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় পুড়ে যায়।

পরে তাহের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রায় ৭ মাস চিকিৎসাধীন ছিল। শরীরে আগুনের ক্ষত শুকিয়ে গেলেও মুখের নিচে, গলা ও কণ্ঠনালির কাছে চামড়া ভাঁজ ভাঁজ হয়ে যাওয়ায় সে এখন ঠিকমতো কথা বলতে, মুখ বন্ধ করতে এবং খেতেও পারে না।

রুমা জানায়, তাহেরকে অনেক কষ্ট করে অন্যের কাছে হাত পেতে, ভিক্ষা করে নিজের আয়ের অর্থ দিয়ে দুই লাখ টাকার বেশি খরচ করে প্রাথমিকভাবে তাকে বাঁচিয়েছি। সে সময় চিকিৎসকরা বলেছিলেন ৬ মাস পর তাহেরের অপরাশেন করতে হবে। তাহলে সে আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হবার পর চাকরি চলে যাওয়ায় নড়াইলে চলে এসেছি। নিজেই খেতে পারি না। তাহেরকে কিভাবে বাঁচাব। ইতোমধ্যে ৬ মাস পার হয়ে গেছে। তাহেরের চিকিৎস্বার্থে সমাজের বিত্তবানরা যদি এগিয়ে আসেন তাহলে হয়তো সে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে।

রুমা আকতার সোমবার (২ নভেম্বর) জাগো নিউজকে জানান, চিকিৎসকরা কয়েকটি পরীক্ষা দিয়েছেন। যা করার পরই তাহেরের অপারেশনের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু কত টাকা লাগতে পারে অপারেশনে তা চিকিৎসকরা এখনও বলেননি। টেস্টগুলো সম্পন্নের পরই চিকিৎসকরা বলবেন কত টাকা লাগবে।

এ ব্যাপারে আউড়িয়া ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড মেম্বার বদরুল আলম ভূঁইয়া বলেন, ছেলেটির বাবা-মা কেউ নেই। স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন সময় তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করা হয়েছে। শিশুটির সুস্থতার জন্য তিনি সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

এদিকে পিতা-মাতাহীন অসহায় শিশু তাহেরের চিকিৎসা আয়-ব্যয় স্বচ্ছতার সঙ্গে করার সুবিধার্থে অগ্রনী ব্যাংক নড়াইল শাখায় একটি যৌথ সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্ট নম্বর (০২০০০১৬০০৪৮০২) খোলা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ সিলেট দর্পণ ।