মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৯ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তিঃ
আমাদের সিলেট দর্পণ  ২৪ পরীক্ষামূলক সম্প্রচার চলছে , আমাদেরকে আপনাদের পরামর্শ ও মতামত দিতে পারেন news@sylhetdorpon.com এই ই-মেইলে ।
আমেরিকার লুইজিয়ানা যেন সিলেটের রাতারগুল -পলাশ আফজাল

আমেরিকার লুইজিয়ানা যেন সিলেটের রাতারগুল -পলাশ আফজাল

আমেরিকার লুইজিয়ানা যেন সিলেটের রাতারগুল

– পলাশ আফজাল

সিলেটের রাতারগুল বাংলাদেশের একমাত্র সোয়াম্প ফরেস্ট এবং বিশ্বের হাতে গুনা কয়েকটি সোয়াম্প ফরেস্টের অন্যতম।সিলেট শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে গোয়াইনঘাট উপজেলায় এই ফরেস্ট অবস্থিত।যার অবস্থান প্রায় ৩০,৩২৫ একর জায়গা জুড়ে।এর মধ্যে ৫০৪ একর জায়গায় বন আর বাকি এলাকা ছোট বড় জলাশয়ে পূর্ণ। তবে বর্ষায় পুরো এলাকাটিকেই দেখতে একই রকম মনে হয়।

সিলেটের রাতারগুল আমেরিকার লুইজিয়ানার সোয়াম্প ফরেস্ট এর মত প্রায়। রাতারগুল জলাবন বছরে চার থেকে পাঁচ মাস পানির নিচে তলিয়ে থাকে। তখন জলে ডুবে থাকা বনের গাছগুলো দেখতে সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা এসে ভিড় জমায়। অনেক পর্যটক রাতারগুলকে ‘বাংলাদেশের আমাজন’ হিসাবে অভিহিত করেন। বর্ষায় গাছের ডালে দেখা মিলে নানান প্রজাতির পাখি, আবার তখন কিছু বন্যপ্রাণীও আশ্রয় নেয় গাছের ডালে। এছাড়া শীতকালে রাতারগুলের জলাশয়ে বসে হাজারো অতিথি পাখির মেলা। সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত রাতারগুল ভ্রমণের উপযুক্ত সময়।

রাতারগুল একটি প্রাকৃতিক বন, স্থানীয় বন বিভাগ এখানে হিজল, বরুণ, করচ সহ বেশ কিছু গাছ রোপণ করেন। এছাড়াও এখানে চোখে পড়ে জারুল, কদম, জালিবেত, অর্জুনসহ প্রায় ২৫ প্রজাতির জলসহিষ্ণু গাছপালা। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ বন বিভাগ রাতারগুল বনের ৫০৪ একর জায়গাকে বন্যপ্রাণীর অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করে।

মূলত প্রাকৃতিক বন হলেও বেত, কদম, হিজল, মুর্তাসহ নানা জাতের পানি সহিষ্ণু গাছ লাগিয়েছে বন বিভাগ। বিশাল এ বনে রয়েছে জলসহিষ্ণু প্রায় ২৫ প্রজাতির উদ্ভিদ। বড়ই অদ্ভুত এই জলের রাজ্য। কোনো গাছের হাঁটু পর্যন্ত ডুবে আছে পানিতে। একটু ছোট যেগুলো, সেগুলো আবার শরীরের অর্ধেকই ডুবিয়ে আছে জলে। কোথাও চোখে পড়বে মাছ ধরার জাল পেতেছে জেলেরা। ঘন হয়ে জন্মানো গাছপালার কারণে কেমন অন্ধকার লাগবে পুরো বনটা। মাঝেমধ্যেই গাছের ডালপালা আটকে দিবে পথ। হাত দিয়ে ওগুলো সরিয়ে তৈরি করতে হবে পথ। নৌকা দিয়ে গাছের ডালের মাঝখান দিয়ে যেতে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করবে মনে। চারিদিকে সবুজের সমারোহ! সবুজের হাতছানিতে কি যে এক প্রশান্তি লাগে মনে।দৃষ্টি সীমানা যতদূর যাবে ততদূর নয়ন জোড়ায় আলাদা এক নন্দিত রূপে।মনে হবে রূপ সাগরে রূপের রানীর যৌবনের হাতছানি।

রাতারগুলে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার।নৌকা যোগে গিয়ে নেমে টাওয়ারের উপরে উঠে দেখা যায় পুরো রাতারগুল এরিয়া। সে অন্য রকম দৃশ্যপট।লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে ইউরোপ আমেরিকায় গিয়েও হয়ত দেখা মিলতে না পারে রাতারগুলের অপরূপ সৌন্দর্য্য।

পলাশ আফজাল
সম্পাদক – সিলেট দর্পণ

নিউজটি শেয়ার করুন আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায়..

© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ সিলেট দর্পণ ।