রবিবার, ২৮ মে ২০২৩, ০৯:৫০ অপরাহ্ন
দর্পণ ডেস্ক : ভোটারের চেয়ে ভোট বেশি। খাতা কলমে ভোট দিয়েছেন ১৬৫৩জন। কিন্তু গণনার সময় ব্যালট পাওয়া যায় ১৬৭৩ জনের। প্রাপ্ত ভোটের অতিরিক্ত ২০জন গায়েবি ভোট ও ভোটার সম্পর্কে কিছুই জানেন না সংশ্লিষ্টরা।
তবে এসব অতিরিক্ত ব্যালট কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের। পৌরসভা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস অনৈতিক সুবিধা নিয়ে এই ব্যালট সরবরাহ করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন আট নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে হেরে যাওয়া প্রতিদ্বন্দ্বী তিন প্রার্থী। সেইসঙ্গে তার ঘোষিত ফলাফল প্রত্যাখান করে পুনরায় নির্বাচনের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় বিদ্যুৎ কুণ্ডু বলেন, ঘোষিত তফশীল অনুযায়ী ১৬জানুয়ারি অনুষ্ঠিত পৌরসভা নির্বাচনে আট নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে চার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই ওয়ার্ডে মোট নারী-পুরুষ ভোটার রয়েছেন ২১১৫জন।
কাউন্সিলর প্রার্থী বিদ্যুৎ কুণ্ডু অভিযোগ করে বলেন, কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নিকট থেকে মোটা অঙ্কের অনৈতিক সুবিধা নিয়ে তাকে জেতানোর দায়িত্ব নেন। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচন চলাকালীন সময়ে বেশকিছু ফাকা ব্যালট বেশকিছু ফাকা ব্যালট দেন। সেসব ব্যালটে বাইরে সীল মেরে কৌশলে বাক্সে ঢুকানো হয়। তাই ভোটারের চেয়ে প্রাপ্ত ভোট ও ব্যালট বেশি হয়েছে। কিন্তু হিসাব মেলাতে না পারা এবং ফলাফল গড়মিল হওয়ার কারণেই বিষয়টি ধরা পড়েছে। শান্তিপূর্ণ এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করায় এই প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। সেইসঙ্গে পৌরসভার এই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে জাল-জালিয়াতির নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখান করে অচিরেই নতুন তফশীল ঘোষণার মাধ্যমে পুনরায় ভোট দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ওই প্রিসাইডিং অফিসার ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, আমরাও বুঝতে পারছি না অতিরিক্ত ব্যালট কিভাবে এলো। তবে একাধিকবার ভোট গণনা করে দেখা যায় কাউন্সিলর প্রার্থী বিদ্যুৎ কুণ্ডুর উটপাখি মার্কার বান্ডিলে বেশকিছু জাল ব্যালট পাওয়া যায়। পরবর্তীতে নির্বাচনের সহকারি রির্টানিং কর্মকর্তার নির্দেশে সেসব বাতিল করা হয়। এতে করে একটু গরমিল হতে পারে। এছাড়া তিনি কোনো অনিয়মের মধ্যে নেই বলে দাবি করেন।
সহকারি রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার আছিয়া খাতুন এ প্রসঙ্গে বলেন, অতিরিক্ত ব্যালটগুলো সম্ভবত অন্য কোনো কেন্দ্রের। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা ওইসব ব্যালট এনে বাইরে সীল মেরে ভোট দিতে গিয়ে বাক্সে ফেলেছে। তবে অভিযোগ পাওয়ার পর একাধিকবার ভোট গণনাসহ ভুয়া ব্যালটগুলো চিহিৃত করে তা বাতিল করা হয়। সেইসঙ্গে সর্বাধিক ভোট পাওয়া প্রার্থী সৌমেন্দ্র নাথ ঠাকুর শ্যামকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিয়াকত আলী এ প্রসঙ্গে বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে এই ধরণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন এই নির্বাহী কর্মকর্তা।
© স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ সিলেট দর্পণ ।